আজ ০৮ মার্চ ২০১৮ তারিখে একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল। কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, কুড়িগ্রাম এর শিক্ষক মিলনায়তনে সম্মানিত শিক্ষকগণের উপস্থিতিতে 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন কলেজের কর্মযোগী নিষ্ঠাবান অধ্যক্ষ প্রফেসর রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।
জ্ঞানপিপাসু প্রাজ্ঞ অধ্যক্ষ প্রফেসর রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইটের বিষয় নির্বাচন প্রসঙ্গে মূল্যবান দিকনির্দেশনা দেন। বই সমালোচনার গুরুত্ব বর্ণনা করে এরকম একটি জ্ঞানমুখী বিষয় কেন্দ্রিক ওয়েবসাইট তৈরির জন্য সম্পাদককে আন্তরিক ধন্যবাদ প্রদান করেন। তিনি বলেন, বই পাঠ একজন মানুষকে বহুমাত্রিক চিন্তার অধিকারী করে তোলে। একমাত্র বইয়ের জগতে পরিভ্রমণরত ব্যক্তি সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে আলোকিত করে তোলে। তাই বই পাঠকে উৎসাহিত করে তোলে এমন একটি ওয়েবসাইট পরিচালনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের উচ্চ প্রশংসা করেন। তিনি আশা করেন সমাজের প্রতিটি ঘরে 'গ্রন্থগত 'ওয়েবসাইটটি আলোকবর্তিকারূপে জ্ঞানচর্চার আলো ছড়িয়ে দেবে।
কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বইপ্রেমী জনাব ড. মো. আনোয়ার হোসেন মন্ডল তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে শিক্ষা কার্যক্রম বিকাশে এই ওয়েবসাইট বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানবিক সমাজ নির্মাণে বইয়ের ভূমিকা অপরিসীম আর তাই বইপাঠ বৃদ্ধিকরণে যে কোন কার্যক্রমকে তিনি স্বাগত জানান। তিনি প্রত্যাশা করেন সমাজের প্রতিটি স্তরে বই পাঠের উৎসাহ বৃদ্ধিতে 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইট বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
একই কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব মো. আব্দুল হামিদ অসুস্থতার কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাই তিনি মোবাইল ফোনে 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইটের 'অগ্রযাত্রা শুভ হোক' এই আশীর্বাদ করেন। তিনি প্রস্তাব করেন বিভিন্ন ধরণের মননশীল বইয়ের আলোচনা সমালোচনা যেন ওয়েবসাইটে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা হয়। বুদ্ধিবৃত্তিক ও বিশ্লেষণী চিন্তার বিকাশে 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইট সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এই তাঁর প্রত্যাশা।
উদ্বোধনী সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মো. এরশাদুল হক। তিনি বিভিন্ন বিষয়ের বইপাঠের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেন। তিনি জানান মানুষ কাজের চাপে বই পাঠের সময় পায়না একথা সত্যি নয়। যিনি জ্ঞানান্বেষনে আগ্রহী তিনি কাজের ফাঁকে ফাঁকে বই পড়েন। তিনি নিজে অপ্রচলিত বিষয়ে বই পড়তে খুব উৎসাহী। তিনি মনে করেন নতুন একটি বিষয় জানা মানে জীবনের সামনে নতুন একটি দিক উন্মোচন হওয়া। 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইটে যেন নানারকম অজানা বিষয়ভিত্তিক বইয়ের আলোচনা প্রকাশ করা হয় সেই আহ্বান জানান।
ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মো. ফজলুল হক তাঁর বক্তব্যে ডিজিটাল যুগে ইলেকট্রনিক বইয়ের পাশাপাশি কাগজে ছাপানো বইয়ের নানা সুবিধা আলোচনা করেন। তিনি সমাজে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বই পাঠে অনীহা দূরীকরণে 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইটের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যাভিমূখী কার্যক্রম প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন আধুনিক যুগে মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন রকম ইলেকট্রনিক গেজেটের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে; এই নির্ভরতার পরেও তারা যেন বইবিমুখ না হয় সেজন্য 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইট যেন সক্রিয় থাকে।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মো. আব্দুল হাই তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইট সমাজে বই পড়া আন্দোলন গড়ে তুলতে কাজ করতে পারে। এই ওয়েবসাইটে সকল ধরনের পাঠকের কথা যেন বিবেচনা করে সব ধরনের বইয়ের আলোচনা প্রকাশ করা হয়। সবাই যেন সহজে 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইটের কথা জানতে পারে, তার জন্য দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দেন। নিত্যনতুন বইয়ের খবর জানার জন্য এই ওয়েবসাইট একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠুক সেটাই তার প্রত্যাশা।
সবশেষে 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইটের সম্পাদক সুশান্ত বর্মন বই পাঠের আনন্দ, বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানতৃষ্ণার আগ্রহ প্রসারে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি জানান নতুন প্রজন্ম বইপাঠে অনাগ্রহী একথা সর্বাংশে গ্রহণযোগ্য নয়। বরং মানুষ বই পাঠ করতে চায়, কিন্তু পছন্দের বইয়ের খোঁজ না পাওয়ায় তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এছাড়াও বইয়ের বিবরণী, পরিচিতি প্রদানে মিডিয়াগুলোর অনাগ্রহ কাঙ্ক্ষিত বইটিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে না। এমতাবস্থায় 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইট আগ্রহী পাঠকের নিকট তার পছন্দের বইকে পরিচিত করে তোলার দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করতে চায়।
সম্পাদক জানান, বর্তমান সরকারের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানুরাগী সমাজ গঠনে 'গ্রন্থগত' ওয়েবসাইট নিবেদিত রয়েছে। এই কার্যক্রমে সকলের সহযোগিতা সমাজের ঘরে ঘরে পাঠাগার তৈরিতে আরও ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
0 মন্তব্যসমূহ
মার্জিত মন্তব্য প্রত্যাশিত। নীতিমালা, স্বীকারোক্তি, ই-মেইল ফর্ম