তিউড়ি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে অয়ন্ত ইমরুল এর কবিতার বই “সাদা ধূলির দূরত্বে”৷
বইটির ভূমিকাঃ
ইজির মধ্যে কি যেন টুপ করলো!
বাঁকনলে ফুঁ দিতে গিয়ে দেখলাম আন।
নিজের বই নিয়ে নিজে বলতে গেলে যা হয় আর কি।
“সাদা ধূলির দূরত্বে” উচ্চারণের মধ্য দিয়ে একটা বিউগল ভাষা পেয়ে গেল। একটা বেউড়বন কাৎ হল কোড়ল ফোটার টুং শুনে। ঝিঁঝিঁ-র সমাবেত গান বায়না ধরলো-দীর্ঘ যাব। আমারে উতলা পায় কোন কল-কন্ঠধ্বনি। হিজলের অপসৃত ছায়া। ঘুড়ির ভোঁ-কাট্টা জুড়ে তখন হালভাঙা ক্ষেত-ক্ষেতের পান্নাটা বহুদূর রামধনু টাঙিয়ে রেখেছে। আমি শুনতে পেয়েছিলাম একলা নাটাইয়ের ক্রন্দন।
লাটিমের ঝিম থেকে যতদূর ডাহুকের দুপুর —আমার খালি পায়ের তাইরেনাইরে মিনজিরির সন্ধে অবধি ঠেকতো। তারপরতো পড়ার টেবিলে পরী নামাতাম। দাদার হুঁকার মিড়ে তখন আলতো হয়ে রেবতি, পুঁথির আলম্ব দূরে ঘোল করতো জৈগুন।
জেলিরা শহর খেলতে চাইল। শান্ত যে পুকুরে ঢিল ছুঁড়তাম- যাবার আগে জেলিরা বলে গেলঃ
ফাল্গুইনা বাতাসে যদি বুকটা মোচড় দিয়া ওঠে-শিশুরা গাছে উঠতে পারে না বলে বাবাদের সিঁড়ি হতে দেখলাম। তারপর তো এই সাদা ধূলির দূরত্বে- মিনজিরি গুমোট গাইলো হাওয়ায়। মতিমহরের বিল থেকে উড়ে গেলো কানাবগি। এই এতো দূর ময়নাকাঁটা বিঁধবে, কখনও কী আঁচ করতে পেরেছে দূর্গা দোল টুনটুনি?
আমারে ভাইবো তুমি কোলের সিঁথিহাঁস
একবার জামরুল বনে দুপুর ঝিম-
কেন যে তার তিড়িঙ টুকু চোখ খায়। বেউতির ফাঁক দিয়ে গলে গলে পড়ে ইলিশের রূপা-তার জোছনগুলো দেখে গাছের অনেকটা দূরে ছাতিম-ছল ও কল ধরা ছায়া প্রতিফলিত, নিবিড় স্পর্শে গেছি।
পিউকাঁহা আসে-আমারে আনচান পায়
দুধসর নদী। এখানে এই ফাঁড়ির উপর টের পাই ঠান্ডা হাওয়া। যেতে যেতে লুকানো দুপুর-কুহুটি দেখি ক্যাসেটবন্দী। আমি আর ফিরবো না দাঁড়িয়াবান্ধার ঘরে। ময়না ফুপু, নাজমা ফুপু এখন ভানাবউ। জেমিমা হাইহিলে পা পুরে পাহাড় ঠেলছে। আব্বা আর আসে না শহর থেকে। তবুও তো মঙ্গলবার আর শনিবার-ধূলশুরার হাঁটবার-কেউ না কেউ বেতরাঙা মাছ কিনে খালই ভরে বাড়ির দিকে গুচাচ্ছে সন্ধে আবার। এই এতো দূর-সাদা ধূলির দূরত্বে এসেও আমার চোখ এসব পায়। আর একটা দীর্ঘশ্বাস জিইয়ে রাখি আমর্ম। পাতের তারায় লো-অর্ডারের হাত কাঁপে। কাঁপে কী কোন বালার হাতের ভীরু দীপ?
নিরালা হয়ে ওঠা বাড়িটা এভাবেই জাগায় জয়তুনের একাগুলো আর বুনোতুলসির গন্ধে কাঁপে দাদার হুঁকার মীড়। আমি টের পাই এই এখানে-
সাদা ধূলির দূরত্বে মেঘপিয়নের খাকি ব্যাগে ইহজন্মের মেঘ......
আমারে উতলা পায় মিঠা পানির ছলাৎ।
খাইয়াবাবলায় সাত ডোরা রু রু কখন যে কার মিতকনে-ভাবতেই আষাঢ়স্য সানাই বলে বসেঃ
গাইবো না এর নলা রোদের রাগভৈরবী,
আমাকে থামতে হয় অন্ধ হুতুমের ডুরে-
সাদা ধূলির দূরত্বে......
------------------------------
প্রকাশক: মাইবম সাধন
প্রচ্ছদশিল্পী: সমীরণ ঘোষ
প্রাপ্তিস্থান: অমর একুশে বইমেলা, ২০১৯, তিউড়ি [স্টল: ৫৮৯], সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। পাওয়া যাবে ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ থেকে।
মূল্য: টাকা ১৬০/-
0 মন্তব্যসমূহ
মার্জিত মন্তব্য প্রত্যাশিত। নীতিমালা, স্বীকারোক্তি, ই-মেইল ফর্ম