২০২০ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে শূন্য দশকের শক্তিমান কবি মানিক বৈরাগীর জোড়াবই 'শের-এ মানিক বৈরাগী' ও 'মৃত্যুর গান গাই'।
বইদুটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন কবি ও প্রচ্ছদশিল্পী নির্ঝর নৈঃশব্দ্য। দুটো বইয়ের দাম যথাক্রমে ১৫০টাকা ও ৫০ টাকা। দুটো বইয়ের মধ্যে 'শের-এ বৈরাগী' বইটি প্রকাশ করেছে বর্ণচাষ প্রকাশনী; আর 'মৃত্যুর গান গাই' নামের কবিতাপুস্তিকাটি প্রকাশ করেছো শ্রাবণ প্রকাশনী।
নিজের বইদুটি সম্পর্কে লেখক তার মনোভঙ্গি, ভাবনা এবং মর্মবোধ অকপটে প্রকাশ করেছেন। 'শের-এ মানিক বৈরাগী' সম্পর্কে কবি বলেছেন-
শেয়ের’ শব্দটা আরবি। এর বাংলা ব্যুৎপত্তি হল কবিতা। উর্দু-ফারসি সাহিত্যে ‘শেয়ের’ এর জনপ্রিয়তা অত্যন্ত তুঙ্গে। মীর্জা গালিব-হাফিজ প্রমুখ কবিগণ ‘শেয়ের’ রচয়িতা হিসেবে প্রসিদ্ধ হয়ে আছেন। যেহেতু এই পদগুলোতে আরবি-ফারসি-হিন্দি-উর্দু শব্দের সংমিশ্রণ ঘটেছে, তাই এই পদগুলোকে ‘শেয়ের’ বলাটা যথাযথ মনে করি। এই ‘শেয়ের’ হঠাৎ খেয়ালের বশে রচনা নয়। আমার দীর্ঘ দীর্ঘ কালের লালিত নার্সিসিজমের ধারণা থেকে আমার ভেতরে জন্ম নিয়েছে এক ধরণের আত্মবাদ, আত্মপ্রেম, আত্মগর্ব, আত্মশ্লাঘা ও আধ্যাত্মবাদের বৈশিষ্ট্যাবলী। এই কবিতাগুলো সেই চেতনারই ক্ষুদ্র নির্যাস মাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদী কুচক্রিগোষ্ঠীর হামলার শিকার হয়ে জীবনমৃত্যুর লড়াইয়ে টিকে থাকা কালকে আমি বলি আমার দ্বিতীয় জীবন। এই জীবনে আমি হয়ে ওঠি প্রবল নাসির্সিস্ট। আত্মপ্রেম, আত্মকেন্দ্রিকতার বলয় থেকে আমি শিখেছি জীবন ও দারিদ্রতাকে অবজ্ঞা করতে। আবার আমার মনচৈতন্যে পুষে রাখি আত্মহননের অভিলাষও। তাই এই ‘শেয়ের’ গুলোতে আমি নিজেকে ফোটাতে চেয়েছি নার্সিসাস ফুলের মতো।
দ্বিতীয় বই 'মৃত্যুর গান গাই' সম্পর্কে কবি বলেন-
এটি একটি কবিতাপুস্তিকা। আমি তো চিরস্থায়ী রোগী, মৃত্যুচিন্তা ঘিরে থাকে সবসময়। এসব ভাবনা বইটিতে লিপিবদ্ধ হয়েছে।
কবি মানিক বৈরাগীর জন্ম ২৮ জানুয়ারী ১৯৭১ সালে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সিকলঘাটার লক্ষ্যারচরে। তাঁর প্রকাশিত বইসমূহ: গহীনে দ্রোহ নীল (কবিতা), শুভ্রতার কলঙ্ক মুখস্ত করেছি (কবিতা) নৈনিতালের দিন(কবিতা) 'বন বিহঙ্গের কথা' ও 'ইরাবতী ও কালাদান' তাঁর শিশুতোষ গল্প। তিনি সম্পাদনা করেছেন সাহিত্যের ছোটকাগজ 'গরাণ'। এছাড়া অনেক ছোটকাগজ ও স্মারকগ্রন্থের সম্পাদনা পর্ষদে জড়িত ছিলেন।
তাঁর কবিতা দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে পাঠক সমাদৃত। সম্প্রতি তিনি মুম্বাইয়ের বহুভাষী অনলাইন পোর্টাল স্টোরি মিরর কর্তৃক প্রদত্ত 'লিটারারি ক্যাপ্টেন' উপাধীতে ভূষিত হন। এছাড়াও তাঁর সাহিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন 'কবি অমিত চৌধূরী মূল্যায়ন সম্মাননা পদক' কক্সবাজার অন্তরা সাংস্কৃতিক কর্তৃক প্রদত্ত 'গুণীজন সম্মাননা' ও 'বঙ্গবন্ধু জাতীয় সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা।'
0 মন্তব্যসমূহ
মার্জিত মন্তব্য প্রত্যাশিত। নীতিমালা, স্বীকারোক্তি, ই-মেইল ফর্ম