অমর একুশে বইমেলা ২০২০ এ প্রকাশিত হয়েছে সমতোষ রায় এর কাব্যগ্রন্থ 'চক্রব্যূহ', প্রকাশ করেছে উত্তরা এক্সপ্রেস , এর আকর্ষণীয় প্রচ্ছদ অংকন করেছেন চারু পিন্টু ৷ গ্রন্থমেলায় পাওয়া যাবে বই স্টল নং:৭০৭ এবং লিটল ম্যাগ প্রাঙ্গন। মূল্য : আশি টাকা মাত্র
অমর একুশে বইমেলাতে নতুন বই প্রকাশের অনুভূতি এবং সমকালীন বিষয়ে ভাবনা নিয়ে সমতোষ রায় কথা বলেছেন গ্রন্থগত ডট কম এর সঙ্গে।
====================
❑ সম্প্রতি আপনার বই প্রকাশিত হলো৷ আপনার অনুভূতি জানতে চাই৷
## দীর্ঘ ছয় বছর ( অর্ধ যুগ) পরে দ্বিতীয় কবিতাবই 'চক্রব্যূহ' প্রকাশিত হলো। প্রথম বই প্রকাশের আগে ও পরে যে উত্তেজনা কাজ করেছিল তা এই বই এর ক্ষেত্রে অনেকটাই স্তিমিত হয়ে গেছে। তবে একটা ভয় বা উৎকণ্ঠা কাজ করছে, দ্বিতীয় বইটা প্রথম বই এর প্রাপ্তিকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে তো?
❑ বই প্রকাশের সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন কীভাবে?
## প্রথম বই প্রকাশের ক্ষেত্রে বন্ধুদের উস্কানি ও আমার আবেগ কাজ করেছিল। তবে এই বই এর ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু অন্য রকম, উস্কানি এবারও ছিল আর সেই উস্কানিদাতা আমার ভেতরে লুকিয়ে থাকা একজন কবিতা পাঠক। আর আবেগ তো এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।
❑ বইটি প্রকাশ করতে প্রকাশক নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয়েছিলো কি?
### না।
❑ নিজের লেখার প্রতি আত্মবিশ্বাস কতটুকু?
### শতভাগ। তবে এই আত্মবিশ্বাস অবশ্যই অহংকার নয়।
❑ কবিতাই কেন লিখলেন? ভাব প্রকাশের জন্য শিল্পের আরও তো মাধ্যম আছে।
### এটা একটা জটিল প্রশ্ন। তবে সরলভাবে এর একটা উত্তর দেয়া যায় সেক্ষেত্রে নস্টালজিয়ার সাগরে একটু ডুব দিয়ে আসতে হবে। তখন ক্লাস সেভেন-এইটে পড়ি। একদিন বাংলা বই পড়তে গিয়ে দেখি কবি লেখকরা শরীরিভাবে মৃত্যু বরণ করেছেন কিন্তু তাদের লেখার মাধ্যমে যেন আমার সামনাসামনি বসে কথা বলছে। এই বিষয়টা আমার ভেতরে গেঁথে গেল। তারপর মনে হলো আমি তো একবারই পৃথিবীতে এসেছি চেষ্টা করে দেখা যাক এই পৃথিবীতে আসাটাকে কাজে লাগানো যায় কিনা। কাজে লাগানো অর্থে কবিতা লেখার বিষয়টায় যে কেন মাথায় আসলো তা আমার জানার বাইরে। তবে একথা সত্যি, কবিতা লেখা ব্যাতিত আর কোনও কাজই মন থেকে করা হয়ে ওঠে না।
❑ অনেকে বলেন লেখার ক্ষেত্রে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আপনারা প্রস্তুতির কথা জানতে চাই।
### কথাটা সম্পুর্ন সঠিক। প্রস্তুতি ব্যাতিত অন্য কোনও কাজ যেমন সফল হয় না ঠিক তেমনই একটি ভালো লেখাও দানা বেঁধে উঠতে পারে না। একজন উঠতি কবি বা লেখকের ক্ষেত্রে প্রস্তুতি বলতে পাঠ, পাঠ এবং পাঠ।সেক্ষেত্রে আমিও এর বাইরে নই। তবে এই পাঠের সাথে ভ্রমণ এর গুরুত্বও আমার কাছে অপরিসীম। আসলে এই পাঠ ও ভ্রমণ গড়ে দেয় একজন সৃষ্টিশীল মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি।
❑ পাণ্ডুলিপি গোছানোর ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন?
### আসলে একটি বিষয়কেই গুরুত্ব দিয়েছি আর তা হলো কবিতাযাপনের একটি নির্দিষ্ট সময়কালকে ধরার।
❑ শিল্প না কি পাঠক, আপনার দায়বদ্ধতা কার কাছে?
## অবশ্যই শিল্প। শিল্পের কাছে দায়বদ্ধ থাকলে আপনা আপনি পাঠকের কাছের দায় পূরণ হয়ে যায়।
❑ একজন পাঠক হিসেবে যখন বইটি দেখছেন/পড়ছেন, তখন বইটিকে কেমন মনে হচ্ছে?
### একজন পাঠক হিসেবে যখন আমি বইটি পড়েছি তখন মনে হয়েছে এই বই এর ভেতর কবির বিশ্বাস, বিদ্রোহ, ধর্ম... সর্বোপরি একজন কবির কবিতা যাপনটাই উঠে এসেছে।
❑ অধিকাংশ লেখক বইমেলাকে কেন্দ্র করে বই প্রকাশ করে, বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?
### বর্তমান কমার্শিয়াল সিস্টেমটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে আমরা কোনও কর্ম শুরু করার আগেই সেই কর্মের ফল (লাভ/প্রাপ্তি) নিয়ে ভাবি। এই লাভ বা প্রাপ্তি বলতে শুধু টাকাকে বোঝানো হচ্ছে না কখনও কখনও সস্তা খ্যাতি বা পরিচিতি হয়ে ওঠে একমাত্র লাভ বা প্রাপ্তি। এইসব কারণেই অধিকাংশ লেখক বই মেলাকে কেন্দ্র করে বই প্রকাশ করে থাকে। তবে একথাও ভুলে গেলে চলবে না বইমেলা হলো লেখক -পাঠক-প্রকাশকের মিলন মেলা। সেক্ষেত্রে একজন প্রতিশ্রুতিশীল সম্ভাবনাময় তরুণ কবি বা লেখক খুব সহজেই অনেক পাঠকের কাছে পৌঁছে যায়। আসলে কর্ম দিয়ে নয়, কর্মের পেছনে অভীষ্ট-লক্ষ্য দিয়েই সেই কর্মকে ভালো অথবা খারাপ নির্ধারণ করা উচিৎ।
===============
চক্রব্যূহ
সমতোষ রায়
প্রকাশন: উত্তরা এক্সপ্রেস
পরিবেশক : প্রকৃতি ০১ কনকর্ড এম্পোরিয়াম কাঁটাবন ঢাকা
প্রচ্ছদ : চারু পিন্টু
মূল্য : আশি টাকা মাত্র
0 মন্তব্যসমূহ
মার্জিত মন্তব্য প্রত্যাশিত। নীতিমালা, স্বীকারোক্তি, ই-মেইল ফর্ম