সাক্ষাৎকারঃ অনিন্দ্য দ্বীপ

সাক্ষাৎকারঃ অনিন্দ্য দ্বীপ

এই বৎসরের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে অনিন্দ্য দ্বীপের বই "দেহপাঠের ব্যাকরণ"। বইটি প্রকাশ করেছে পরিবার পাবলিকেশন্স। প্রচ্ছদ এঁকেছেন আল নোমান। বইটি পরিবেশনায় রয়েছে চন্দ্রবিন্দু। পাওয়া যাচ্ছে স্টল নং ২৭০। বইয়ের মূল্য: ১৩৫ টাকা।

২০২০ সালের একুশে বইমেলায় নতুন বই প্রকাশকালে অনিন্দ্য দ্বীপ তার অনুভূতি এবং ব্যক্তিগত সাহিত্যভাবনা প্রকাশ করেছেন বই আলোচনার ওয়েবসাইট গ্রন্থগত.কম এর সাথে।
==============

১। সম্প্রতি আপনার বই প্রকাশিত হলো৷ আপনার অনুভূতি জানতে চাই

উত্তরঃ এটা আমার তৃতীয় কবিতাবই। প্রথম বই প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালে। তারপর দীর্ঘ একদশকের অপেক্ষার পর গত বছর প্রকাশিত হয় ‘মুখোশের রঙ”। এবছর আসে ‘দেহপাঠের ব্যাকরণ। এই দীর্ঘ জার্নির মধ্যে আমি জানি আমার পাঠক চাহিদা। সুতরাং বই নিয়ে আমার আলাদা কোন উচ্ছ্বাস নেই। তবে বই প্রকাশের আগের মুহূর্তটা উপভোগ করি। প্রিয়জন আসার মতো অপেক্ষা করি… প্রকাশের পর বইটা দেখা হয় মূলত এর ছাপা, বাঁধাই কেমন হতো দেখার জন্য।

❑ বই প্রকাশের সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন কীভাবে? 

উত্তরঃ সব কিছুর একটা চূড়ান্ত রূপ আছে। আপনার লেখার মাধ্যম যাই হোক বই প্রকাশ হচ্ছে পাঠকের কাছে যাওয়ার চূড়ান্ত রূপ। আমি যেহেতু লেখালেখিকেই যাপনের সঙ্গী মেনে নিয়েছি, নিয়মিত লেখালেখির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সুতরাং এইসব লেখার শেষ পরিণতি বই প্রকাশ।

 ❑ বইটি প্রকাশ করতে প্রকাশক নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয়েছিলো কি?

উত্তরঃ আমার ভাগ্য ভালো বলা যায়! সোহানুর রহিম শাওন ভাইর মতো একজন প্রকাশকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। তিনি তরুণদের ব্যাপারে যথেষ্ঠ পজেটিভ চিন্তা করেন। পুরো লস প্রজেক্ট জেনেও তিনি প্রতিবছর নতুন লেখকদের বই করেন। ধন্যবাদ পরিবার পাবলিকেশন্সকে। কৃতজ্ঞতা জানাতে হয় রুদ্রাক্ষ রায়হানকে। ও না থাকলে হয়তো শাওন ভাইর সাথে পরিচয়ই হতোনা।

❑ নিজের লেখার প্রতি আত্মবিশ্বাস কতটুকু?

উত্তরঃ আমি জীবনের কোন ব্যাপারেই আত্মবিশ্বাসী নই। লেখার ব্যাপারেও আমি সব সময় সংশয়বাদী। একটা লেখা লেখার পর বারবার এডিট করি। বই করতে গিয়ে বারবার এডিট করি। বই প্রকাশের পরও নিজের ভেতরে একধরনের হীনমন্মতা কাজ করে।

❑ কবিতাই কেন লিখলেন? ভাব প্রকাশের জন্য শিল্পের আরও তো মাধ্যম আছে।

উত্তরঃ এটা ভালোলাগা, ভালোবাসার ব্যাপার। আসলে কবিতাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি। চর্চার জায়গাটাও এই কবিতা। কিন্তু এর মানে নিশ্চয়ই এই নয় আমি লেখার ক্ষেত্রে শুধু কবিতাতেই থিতু হবো! এ বইয়ের পর আমার কবিতার বই আসার সম্ভাবনা কম। কিন্তু লেখা ছাড়া যদি অন্য মাধ্যমের কথা বলেন সেটা সম্ভব নয়। কারণ শিল্পের অন্য মাধ্যমগুলোতে যে চর্চা বা প্রতিভার প্রয়োজন কোনটাই আমার নেই।


তিনি তরুণদের ব্যাপারে যথেষ্ট পজেটিভ চিন্তা করেন।

 

 ❑ অনেকে বলেন লেখার ক্ষেত্রে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আপনারা প্রস্তুতির কথা জানতে চাই।

উত্তরঃ লেখার ক্ষেত্রে আমার কোন প্রস্তুতি নেই। প্রস্তুতি নিয়ে আমি লিখতে আসিনি। বরং বলা যায় লিখতে লিখতে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

❑ পাণ্ডুলিপি গোছানোর ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন?

উত্তরঃ আমি মিছিলের মানুষ। লেখার ক্ষেত্রে বারবার এইসব শ্লোগান এসেছে। আগের দুটো বইয়ে অভিযোগ ছিল আমি প্রেমের কবিতা লিখিনা। মূলত আমি প্রেমের কবিতার জন্য আলাদা বইয়ের চিন্তা করে ছিলাম। সেক্ষেত্রে এই বইয়ের শুরুতে একটু ভিন্নতা আছে। আসলে এইটা বইটায় আমি আমাকে প্রকাশের একটা সুযোগ নিয়েছি। বইটার কবিতাগুলো সাজানো হয়েছে মা, বাবা, বাড়ি, জন্ম, শৈশব, স্বপ্ন ও প্রেম। প্রেমের আগ পর্যন্ত একটা ধারাবাহিকতা আছে কিন্তু তারপরের কবিতাগুলোয় প্রেমের নানামাত্রা ও রূপকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।

❑ শিল্প না কি পাঠক, আপনার দায়বদ্ধতা কার কাছে?

উত্তরঃ শিল্প নিয়ে আমি পাঠকের কাছে যেতে চাই।

❑ একজন পাঠক হিসেবে যখন বইটি দেখছেন/পড়ছেন, তখন বইটিকে কেমন মনে হচ্ছে  ?

উত্তরঃ বই প্রকাশের পর আমি নিজের বই পড়িনা। যদি কখনো পড়া হয় অন্য বইগুলো যেমন প্রয়োজনে বা ভালোলাগায় পড়া হয়, তেমনি ভাবে নিজের বইটি পড়া হবে।

❑ অধিকাংশ লেখক বইমেলাকে কেন্দ্র করে বই প্রকাশ করে, বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?

উত্তরঃ লেখক বই প্রকাশ করেন না। প্রকাশের দায়িত্ব নেন প্রকাশক। প্রকাশক উপলক্ষ্য খোঁজেন। আমি প্রকাশকের জন্য এই ভীড় বা উপলক্ষ্যকে পছন্দ করি। কারণ অনেক লোকের ভীড়ে অনেক অপরিচিত মানুষও
আমার বইটা কিনছেন, পড়ে দেখছেন!

---------------
দেহপাঠের ব্যাকরণ
অনিন্দ্য দ্বীপ
প্রচ্ছদঃ আল নোমান
বইটির প্রকাশক: পরিবার পাবলিকেশন্স
স্টল নং ২৭০
মূল্য: ১৩৫ টাকা

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ