নতুন গল্পের বই 'বাহান্ন তীর্থ' বিষয়ে শাপলা হকের সাক্ষাৎকার

নতুন গল্পের বই 'বাহান্ন তীর্থ' বিষয়ে শাপলা হকের সাক্ষাৎকার
অমর একুশে বইমেলা ২০২০ এ প্রকাশিত হয়েছে শাপলা হকের গল্পের বই "বাহান্ন তীর্থ"। বইটি প্রকাশ করেছে চৈতন্য। প্রচ্ছদ এঁকেছেন নির্ঝর নৈঃশব্দ্য। পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা বইমেলায় স্টল নাম্বার ২৫০–২৫১। বইয়ের মূল্য ২৬০ টাকা।

শাপলা হক তার নতুন বই প্রকাশকালের অনুভূতি এবং ব্যক্তিগত সাহিত্যচিন্তা অকপটে প্রকাশ করেছেন বই আলোচনা সমালোচনার ওয়েবসাইট গ্রন্থগত.কম এর সাথে।
==============

❑ সম্প্রতি আপনার বই প্রকাশিত হলো৷ আপনার অনুভূতি জানতে চাই৷

## “বাহান্ন তীর্থ” আমার প্রথম একক বই। প্রথম বই প্রকাশের আনন্দ নিশ্চয়ই অন্যরকম কিছু- আমার বেশ ভালো লাগছে।   

 ❑ বই প্রকাশের সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন কীভাবে? 

## আমার বেশ কিছু গল্প, কবিতা বিভিন্ন ওয়েবজিনে, সংকলনে প্রকাশিত হয়েছে গত বেশ ক’বছর যাবত। বই প্রকাশের চিন্তা মূলতঃ একসময় মাথায় এসেছে লেখাগুলোকে একসাথে রাখার জন্য। ২০১৯ এর প্রথমদিকে ভাবছিলাম, ছোটগল্প এর একটা পান্ডুলিপি তৈরি করে রাখা যাক- প্রকাশিত হোক বা না হোক। নতুন পুরনো পনেরোটি গল্প মিলিয়ে বছরশেষে এভাবে “বাহান্ন তীর্থ” এর পান্ডুলিপি তৈরি হলো। 

❑ বইটি প্রকাশ করতে প্রকাশক নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয়েছিলো কি? 

## না, প্রকাশক নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয়নি। রাজীব ভাই পূর্ব পরিচিত এই অর্থে যে  ব্লগারদের একটা সংকলন উনি এর আগে করেছিলেন, সেই সূত্রে চৈতন্য প্রকাশনীর কাজের সাথে পরিচিত ছিলাম।  কথার প্রেক্ষিতে একদিন উনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, যদি আমার নিজের বই করি, উনি প্রকাশ করবেন কী না। উনি সানন্দে সায় দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে উনিই আমাকে বারবার পান্ডুলিপি পাঠানোর তাগাদা দিয়েছেন। রাজীব ভাই চমৎকার মানুষ। উনি যত্ন নিয়ে কাজ করেন।

❑ নিজের লেখার প্রতি আত্মবিশ্বাস কতটুকু?

লিখি মনের আনন্দে।
## লিখি মনের আনন্দে। ভুল শুদ্ধতা, লাভ ক্ষতি, প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি- এসবের বাইরে গিয়ে লিখতে ইচ্ছে করে। নিজের লেখার প্রতি আত্মবিশ্বাস মানে বলতে যদি পরিতৃপ্তি বোঝান, তাহলে বলব, লেখকের পরিতৃপ্তি হয়ত সহজে আসে না। আসা উচিতও নয়।

❑ অনেকে বলেন লেখার ক্ষেত্রে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আপনারা প্রস্তুতির কথা জানতে চাই।

## পড়তে ভালবাসি ছোটবেলা থেকেই। আমাদের পড়ার অভ্যাসটা পরিবারগত। আমার দাদাজান ছিলেন একজন স্কলার- অনেক পড়তেন, অনেক জানতেন। আব্বু লিখতেন, চাচাদের কেউ কেউ লিখেন। প্রকাশনার জন্য নয়, মনের তাগিদে। আরেকদিন হয়ত তাদেরকে নিয়ে কথা বলব। সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ থেকে আমি ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়েছি প্রথমে। পরে অবশ্য দেশের বাইরে অন্য একটা বিষয়ে পড়া হয়েছে। লেখার জন্য প্রস্তুতি বলতে এখন আমার যা মনে হয়, পড়তে হবে, লিখতেও হবে অনেক। তবে এসব নিছক প্রস্তুতির অংশ। লেখক হয়ে ওঠার পেছনে এর বাইরেও আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ কাজ করে। ক্রিয়েটিভিটি থাকতে হবে। জীবনের প্রতি উদার দৃষ্টি থাকতে হবে যেটার অভাবে অনেকে লেখক হতে গিয়েও হতে পারেন না।

❑ পাণ্ডুলিপি গোছানোর ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন?

## আমার পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েছি।

 ❑ শিল্প না কি পাঠক, আপনার দায়বদ্ধতা কার কাছে?

## লেখার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা কারো কাছে নেই আমার। আমি Free Soul. যা ভালো লাগে, তাই করি। আমার কাজ লিখে যাওয়া। সেটা শিল্প হল কি হলো না- সেটা না হয় অন্য কেউ নির্ধারণ করবে।   

 ❑ একজন পাঠক হিসেবে যখন বইটি দেখছেন/পড়ছেন, তখন বইটিকে কেমন মনে হচ্ছে?

## দেশের থেকে দূরে আছি, আক্ষরিকভাবে “বাহান্ন তীর্থ” এখনো হাতে ধরে পরখ করে দেখিনি। আমার এক ভাই দেশে বেড়াতে গেছেন, মাসখানেক পর ফিরবেন এখানে, তখন বই হাতে পাবো। তবে নিজের বইকে পাঠকের দৃষ্টিতে বিবেচনা করা কঠিন। সেই কাজ নাহয় অন্যরা করুক।

 ❑ অধিকাংশ লেখক বইমেলাকে কেন্দ্র করে বই প্রকাশ করে, বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?

## বিষয়টিকে পজিটিভলি দেখি। ফেব্রুয়ারি এলে বইমেলা জমে উঠছে, লেখক পাঠক এক প্ল্যাটফর্মে আসছেন, পুরো মাসব্যাপী  বইকেন্দ্রিক আলোচনা, সমালোচনা চলছে। নতুন কিছু জানার জন্য হোক অথবা মন ও মননের পরিতৃপ্তির জন্য হোক- বই কেনাকাটা হচ্ছে এই উপলক্ষ্যে। নতুন লেখকদের পরিচিতি হচ্ছে সহজে। অধিকাংশ লেখক হয়ত বিপণনের সুবিধার জন্য এই সময়কে টার্গেট করেই বই প্রকাশের চিন্তা করেন।

===============
বাহান্ন তীর্থ
শাপলা হক
প্রচ্ছদঃ নির্ঝর নৈঃশব্দ্য
প্রকাশকঃ চৈতন্য
দামঃ ২৫০ টাকা

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ