বই প্রকাশের অনুভূতি এবং সাহিত্য-ভাবনা নিয়ে রাকিবুল হায়দার কথা বলেছেন গ্রন্থগত ডট কম এর সঙ্গে।
❑ সম্প্রতি আপনার বই প্রকাশিত হলো৷ আপনার অনুভূতি জানতে চাই৷
উত্তরঃ এবার নিয়ে আমার পঞ্চম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হলো। নাম "বিষাদের আঙুলে ভালোবাসা নেই"। বই প্রকাশের শুরুর দিকে কৈশোরের প্রেমের মতো চঞ্চল এক অনুভূতি ছিলো। সময় সেই অনুভূতির অনেকটাই কেড়ে নেয়। তবু বই প্রকাশ হলে মলাটবন্দী লেখাগুলো এখনো অচেনা মনে হয়। মনে হয়, অন্য কেউ লিখে আমার নামে ছাপিয়ে ফেলেছে ভুল করে। সেই অচেনা লোকটার প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরুপ লেখার ময়নাতদন্ত করতে ইচ্ছে করে না আর।
❑ বই প্রকাশের সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন কীভাবে?
উত্তরঃ প্রথম বই প্রকাশের সিদ্ধান্তটা অনেকদিন বুকপকেটে নিয়ে ঘুরেছি। সেই ২০১০ সাল থেকে। শেষে ২০১৪তে গিয়ে বইটা প্রকাশিত হলো। এর পেছনে কয়েকজন মানুষের অবদান ছিলো। কামরুল হাসান ভাই অনেকবার বলেছিলেন, বই বের করতে। তারপর একদিন এক ছেলে অনিক নাম, আমাকে বললো, তার বুকসেলফে আমার বই দেখতে চায়। আমিও এইসব সাহসে দুঃসাহসটা দেখালাম।
আমি আমার পাঠক সত্তাকে সামনে এনে দাঁড় করাই
উত্তরঃ প্রথম বইতে জটিলতাটুকু ছিলো। বাকি বইগুলোতে প্রকাশকদের দারুণ সহযোগিতা পেয়েছি।
❑ নিজের লেখার প্রতি আত্মবিশ্বাস কতটুকু?
উত্তরঃ নিজের প্রতিটি শব্দের প্রতি বিশ্বাস আছে। তবে এর সাথে মানুষের ভালোবাসাটাও দারুণ ভূমিকা পালন করেছে।
❑ কবিতাই কেন লিখলেন? ভাব প্রকাশের জন্য শিল্পের আরও তো মাধ্যম আছে।
মনে হয়, অন্য কেউ লিখে আমার নামে ছাপিয়ে ফেলেছে ভুল করে।
উত্তরঃ কবিতাই কেনো লিখলাম বা কেনো লিখি, এর উত্তরটা জটিল এক সমীকরণে আটকে আছে। উত্তর খুঁজে পাইনা। আমি গদ্যেও পা রেখেছি অনেকবার। তবু দিনশেষে কবিতাটাই নিয়মিত লেখা হচ্ছে। আমার মনে হয়, কবিতায় আমি আমার না বলা চিৎকারটা করতে পারি। কবিতায় নিজেকে একটা মঞ্চে তুলে দিয়ে সামনে মাইক্রোফোন ঠেলে দিয়ে বলতে পারি, এবার বলো, চিৎকার করো। ❑ অনেকে বলেন লিখতে আসলেও একটা প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আপনারা প্রস্তুতির কথা জানতে চাই।
উত্তরঃ দেখুন, লেখালেখির প্রস্তুতিটা বলে কয়ে হয় না। দীর্ঘ এক পথযাত্রায় প্রস্তুতিটা এমনিতেই হয়ে যায়। আমাদের সময়-অসময় আমাদেরকে ধীরে ধীরে প্রস্তুত করে লিখবার জন্য। তারপর একদিন অক্ষর জ্ঞান করিয়ে হাতে খাতা-কলম তুলে দেয়।
❑ পাণ্ডুলিপি গোছানোর ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন?
উত্তরঃ পাণ্ডুলিপি গোছানোর ক্ষেত্রে আমার পাঠকসত্তাটাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।
❑ শিল্প না কি পাঠক, আপনার দায়বদ্ধতা কার কাছে?
উত্তরঃ শিল্পের সমাবেশটা কিন্তু পাঠকদের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে হয়। শিল্পের কাছে দায়বদ্ধতা দেখাতে গেলে পাঠক তার ভাগটা ঠিকই বুঝে পায়।
❑ একজন পাঠক হিসেবে যখন বইটি দেখছেন/পড়ছেন, তখন বইটিকে কেমন মনে হচ্ছে?
উত্তরঃ ঐ যে বললাম, পাণ্ডুলিপি নির্বাচনের সময়েই আমি আমার পাঠক সত্তাকে সামনে এনে দাঁড় করাই। তার রায়টাই থেকে যায় শেষ পর্যন্ত।
❑ অধিকাংশ লেখক বইমেলাকে কেন্দ্র করে বই প্রকাশ করে, বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?
উত্তরঃ তরুণ লেখকদের জন্য বইমেলা দারুণ একটা মঞ্চ। এই মঞ্চে প্রকাশিত হলে পাঠকের সাথে যোগাযোগটা তৈরি হয়। এটা প্রাপ্তির খাতাটা বড় করে। তবে আমি সারাবছর নতুন বই প্রকাশের পক্ষে। কারণ পাঠক কেবল বইমেলার না, সারাবছরের। তাদের সারাবছর অভুক্ত রেখে বইমেলায় একগাদা খাবার দিলে হজমে অসুবিধে হয়।
~~~~~~~~~~~~~~~~
বিষাদের আঙুলে ভালোবাসা নেই
প্রকাশনীঃ নওরোজ কিতাবিস্তান
প্রচ্ছদঃ চারু পিন্টু
স্টল নং- ৩৬৭, ৩৬৮, ৩৬৯
মূল্যঃ ১৫০ টাকা
0 মন্তব্যসমূহ
মার্জিত মন্তব্য প্রত্যাশিত। নীতিমালা, স্বীকারোক্তি, ই-মেইল ফর্ম