মানুষের ইতিহাস (প্রাচীন যুগ): আবদুল হালিম ও নূরুন নাহার বেগম

মানুষের ইতিহাস (প্রাচীন যুগ) :  আব্দুল হালিম ও নূরুন নাহার বেগম

এই পৃথিবীতে মানুষ কীভাবে এল, এই সহজ প্রশ্নটির উত্তর রয়েছে বেশ কয়েক রকমের। দেশাচার, সময়কাল, অর্জিত ও উপলব্ধ জ্ঞান, আবিষ্কৃত বিজ্ঞান ইত্যাদির প্রভাবে মানুষের অগ্রগতির ইতিহাস বিশ্বব্যাপী বহু বিচিত্র ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। আর এইসব মতগুলোর মধ্যে সবচাইতে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে বৈজ্ঞানিক মতবাদ। কারণ প্রাপ্ত তথ্য, উপাত্ত, উপাদান প্রভৃতির ভিত্তিতে বৈজ্ঞানিক ধারণাটি তৈরি করা হয়। বাস্তবে কেউ তো আর মানুষের বিকাশের ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে লিখে রাখে নি। কিন্তু যুগে যুগে সব সমাজের মানুষরা নিজেদের আবির্ভাবের কার্যকারণ জানতে চেয়েছে। নিজেদের চিন্তাসামর্থ অনুযায়ী ব্যাখ্যা দিয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক মতবাদটি মানুষের ইতিহাস রচনার জন্য আশ্রয় নিয়েছে নৃতত্ত্ব, প্রত্নতত্ত্ব, ফসিল, ভূগোল, সাহিত্য প্রভৃতি থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানের। এইসব উৎস থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ শেষে গ্রহণ করা হয়েছে সবচেয়ে বাস্তবানুগ তত্ত্বটি। তাই মানবজাতির বিকাশের ইতিহাস জানতে বৈজ্ঞানিক মতামতটিই সবচেয়ে যৌক্তিক এবং তাই গ্রহণযোগ্য। আবদুল হালিম ও নূরুন নাহার বেগম বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিকোণ থেকে রচনা করেছেন বিদগ্ধ পাঠকের প্রিয় বই মানুষের ইতিহাস (প্রাচীন যুগ)


আলোচ্য বইটির ভূমিকা নিজেই নিজের পরিচয় প্রকাশে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাই তথ্যসমৃদ্ধ সুখপাঠ্য ভূমিকাটির কিয়দংশ প্রকাশ করছি।

ভূমিকা
'মানুষের ইতিহাস' গ্রন্থে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও জাতির সভ্যতার ও সংস্কৃতির ইতিহাস লিখিত হয়েছে। সাধারণভাবে যাকে পৃথিবীর ইতিহাস বা সভ্যতাবলীর ইতিহাস নামে অভিহিত করা হয়, এ গ্রন্থের বিষয়বস্তু তাই। তথাপি যে একে মানুষের ইতিহাস বলা হল তার বিশেষ কারণ আছে।

মানবসমাজ এক ও অখণ্ড। একদা ইউরোপের উপনিবেশবাদী পণ্ডিত-সমাজ প্রচার করতেন যে, এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার কৃষ্ণ ও পীতকায় মানুষরা শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয়দের চেয়ে নিম্নপর্যায়ের মানুষ। পৃথিবীর সব দেশের মানুষ একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। আধুনিক কালের প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সব সুশিক্ষিত ইতিহাসবিদ এবং পণ্ডিতই বিশ্বাস করেন যে সমগ্র মানবসমাজ এক ও অখণ্ড। এবং পৃথিবীর শিক্ষিত ও পণ্ডিতসমাজে এ ধারণাও ক্রমশ প্রসার লাভ করছে যে মানব সমাজের ইতিহাস, অখণ্ড ও অবিভাজ্য। অবশ্য এ কথাটার নানা রকম ব্যাখ্যা হতে পারে।

আধুনিক মানবসমাজের উৎপত্তি হয়েছিল একটা মাত্র উৎস থেকে। আদিম এ মানুষদের সংস্কৃতি ছিল পুরান পাথর যুগের শিকারী সমাজের সংস্কৃতি। এ যুগে মানুষ তার সামাজিক কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজেদের দেহের বিবর্তন ঘটিয়ে যে সুসম্পূর্ণ মানব দেহের উদয় ঘটিয়েছিল, আধুনিক পৃথিবীর সব কটি জাতির প্রত্যেকটি মানুষ সে সুপরিণত মানবদেহেরই উত্তরাধিকারী মাত্র। আদিম শিকারী মানুষ যে সমাজ সংগঠন এবং বস্তুগত ও ভাবগত সংস্কৃতি সৃজন করেছিল তার অনেক উপাদানে আজকের পৃথিবীর সব কটি জাতির ও সমাজের মূল ভিত্তিরূপে কাজ করছে। আদিম মানুষ যে ভাষার উদ্ভাবন ঘটিয়েছিল সে ভাষা ও চিন্তাক্ষমতা, তার উদ্ভাবিত প্রেম, প্রীতি, ভালবাসা প্রভৃতি মানবিক গুণাবলী এবং নানাবিধ সামাজিক আচরণ ইত্যাদি আজকের দিনের সব মানবগোষ্ঠির সামাজিক আচরণের মূল ভিত্তিরূপে বিরাজ করছে। আজকের পৃথিবীর সব মানুষ ও জাতি এ অচ্ছেদ্য যোগসূত্র ও বন্ধনে আবদ্ধ। আদিম শিকারী সমাজের মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে ক্রমশ সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। তারপর দশ হাজার বছর আগে যখন পশ্চিম এশিয়াতে কৃষিভিত্তিক সমাজের উৎপত্তি ঘটেছিল তখন সে সংস্কৃতিও সারা পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করেছিল। এ দুই সমাজের সংমিশ্রণের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে সমাজের বিকাশ ঘটেছিল। কিন্তু এ সকল মানব সমাজ কখনও সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিল না। ছয় সাত হাজার বছর আগে যখন মিশর ও ব্যবিলনে ব্রোঞ্জযুগের নগর সভ্যতার উদয় ঘটেছিল তখন ক্রমশ তার প্রভাবে ও অনুকরণে পশ্চিম এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থঅনে এবং সিন্ধু অববাহিকায়, চীনে ভূমধ্যসাদরের ক্রীটে ব্রোঞ্জযুগের সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। এরপর ব্রোঞ্জযুগের বিভিন্ন অঞ্চলের নানাবিধ আবিষ্কার, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, প্রভৃতির সুযোগ এ প্রভাব লাভ করার ফলে হিট্রাইটরা লোহার আবিষ্কার করেছিল, ফিনিশীয়রা বর্ণমালা আবিষ্কার করেছিল। এবং লিডীয়রা মুদ্রা আবিষ্কার করেছিল। এ সবের ভিত্তিতে গ্রীসে ও অন্যত্র গড়ে উঠেছিল লৌহযুগের উন্নত সভ্যতা। এ সভ্যতার নানা বস্তুগত আবিষ্কার, উপকরণ ও চিন্তাধারা আবার পৃথিবীতে অন্যান্য অঞ্চলে বিস্তার লাভ করেছে। আবার মধ্যযুগে চীন, ভারতবর্ষে যে সব আবিষ্কার ঘটেছে (যথা, চীনের কম্পাস ইত্যাদি; প্রাচীন ভারতের ১০- ভিত্তিক গণনা পদ্ধতি) তার ভিত্তিতে ইউরোপে ধনতান্ত্রিক সমাজের উদয় ঘটেছিল। মানুষের ইতিহাস অধ্যয়ন করলে এ কথা স্পষ্ট দেখা যায় যে, সব যুগেই এক জাতি অপর জাতির কাছে থেকে বা বৃহত্তর মানব সমাজের কাছ থেকে বস্তুগত ও ভাবগত সম্পদ ও উপকরণ সংগ্রহ করে নিজেদের পরিপুষ্টি সাধন করেছে এবং মানব সমাজের অগ্রগতিতে সহায়তা করেছে। মানুষের ইতিহাস তাই মানব সমাজের অখণ্ড ইতিহাস।

কিন্তু মানব সমাজ অবিভাজ্য একথা যেমন সত্য, মানব সমাজ খণ্ড খণ্ড ও বিচ্ছিন্ন এ কথাও সমান সত্য। পৃথিবীর সব মানুষ মূলত এক হলেও তারা বিভিন্ন দেশ ও জাতিসত্তার অন্তর্গত। মানুষের ইতিহাস মূর্ত হয়েছে, বাস্তবায়িত হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন জাতি ও দেশের পরিসরে। মানুষের ইতিহাস তাই ভিন্ন ভিন্ন জাতির খণ্ডিত ইতিহাসের যোগসমষ্টিও বটে।

'মানুষের ইতিহাস' গ্রন্থটি রচনা করতে গিয়ে মানব ইতিহাসের এ দুই প্রধান বৈশিষ্ট্যের প্রতি দৃষ্টি রাখা হয়েছে। প্রথমেই মানুষের উৎপত্তি ও আদিম সমাজের পরিচয় আমরা বিস্তৃতভাবে প্রদান করেছি, যাতে পরবর্তী সভ্য সমাজের উৎপত্তির পটভূমি অনুধাবন করা সহজ হয়। (জড়জগৎ ও জীবজগতের বিবর্তনের পটভূমিতে মানুষের উৎপত্তির বিষয় আলোচনা করলে আরও ভাল হত; তবে, আব্দুল হালিমের লেখা 'বিশ্বজগতের পরিচয়' গ্রন্থটি পাঠ করলে এ বিষয়টা আরও বিস্তৃত ভাবে জানা যাবে।) আদিম সমাজের পরবর্তী পর্যায়ে সব সমাজের ইতিহাসকে বিভিন্ন দেশ ও জাতির ইতিহাসরূপে পৃথক পৃথকভাবে আলোচনা করা হয়েছে। যেমন, ব্রোঞ্জ ও লৌহযুগের মিশরীয়, মেসোপটেমীয় (সুমেরীয়, ব্যবিলনীয়, আসিরীয়, ক্যালডীয়), পারসিক, হিব্রু, হিট্রাইট, ফ্রিজীয়, লিডীয়, ফিনিশীয়, ক্রীটিয়, গ্রীসীয়, রোমক, ভারতীয়, চৈনিক, কোরীয়, জাপানী, মায়া, আজটেক, ইনকা প্রভৃতি সভ্যতা-সংস্কৃতির পরিচয় পৃথকভাবে দেওয়া হয়েছে। আবার বিভিন্ন সভ্যতা সংস্কৃতির মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ ও প্রভাবের বিষয়ও যতদূর আবিষ্কৃত হয়েছে তার উল্লেখ করা হয়েছে। এ সকল প্রাচীন সভ্যতার সমকালে যে সব জাতি অনুন্নত অবস্থায় ছিল তাদের বিষয়ও বিশ্ব ইতিহাসের পটভূমিকায় আলোচনা করা হয়েছে। যেমন, অষ্ট্রেলিয়া ও ওশেনিয়ার আদিবাসী, আফ্রিকার কৃষ্ণ অধিবাসী, ইউরেশিয়ার বর্বর সমাজ (শক, হুন, মোঙ্গল, স্লাভ, গথ, ভ্যাণ্ডাল, ভাইকিং) ইত্যাদির ইতিহাস আলোচনা করা হয়েছে তৎকালীন বিশ্ব ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে। উল্লেখ্য যে, বর্তমান খণ্ডে প্রাচীন যুগের অবসান (প্রায় খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দী কাল) পর্যন্ত মানুষের ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। ... ... ... ...

মানুষের ইতিহাস বা মানব সভ্যতার বিকাশের ইতিহাস এমন একটা বিষয় যা প্রতিটি মানুষের পক্ষে জানা বিশেষভাবে আবশ্যক। বস্তুত, ইতিহাস-জ্ঞান ছাড়া শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না। বিশুদ্ধ বা বিমূর্ত জ্ঞান লাভের প্রয়োজনে মাত্র নয়, সমসাময়িক বিশ্বে নিজের এবং স্বদেশের অবস্থান জানার জন্য, স্বদেশ বা সংস্কৃতির বিকাশ সাধনের যোগ্যতা অর্জনের জন্য মানুষের ইতিহাস অধ্যয়ন করা আবশ্যক। উন্নত দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল জীবনেই পৃথিবীর ইতিহাস পাঠ করে থাকে, মানব সভ্যতার ইতিহাস ঐ সব উন্নত দেশের স্কুলের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষালাভের কোন পর্যায়েই মানব সভ্যতার ইতিহাস অবশ্য পাঠ্য নয়। এমন কি যদি কেউ ব্যক্তিগতভাবে মানব ইতিহাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন তবে তাঁর পক্ষে সহজে এ বিষয়ে জ্ঞানার্জনের কোন উপায় নেই। কারণ বাংলা ভাষায় এ বিষয়ে এ মুহূর্তে কোন সুসম্পূর্ণ গ্রন্থ নেই।

বিশ্বসভ্যতা ও মানবসভ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত ও ধারাবাহিক আলোচনায় সমৃদ্ধ এই বইটির সূচিপত্রের আংশিক বিবরণ নিম্নরূপ:-
  • পুরান পাথর যুগের শিকারী সমাজ
  • মানুষের বিবর্তন (রামাপিথেকাস। অস্ট্রালোপিকেথাস। খাড়া মানুষ। বরফ যুগ। শিকারী মানুষের মগজ। নিয়াণ্ডার্থাল মানুষ। বুদ্ধিমান মানুষ)
  • আদিম সমাজের পরিচয়
  • মাতৃতন্ত্র
  • ক্ল্যান সংগঠন
  • নতুন পাথর যুগের সংস্কৃতি
  • সভ্যতার প্রস্তুতিপর্ব (তাম্রযুগ। ব্রোঞ্জযুগ)
  • প্রাচীন মিশরের সভ্যতা
  • মিশরীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির পরিচয়  (ধর্ম, সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনধারা)
  • মেসোপটেমীয় সভ্যতা
  • মেসোপটেমীয় সংস্কৃতির পরিচয় (সুমেরীয়, ব্যবিলনীয়, আসিরীয়, ক্যালডীয়)
  • প্রাচীন পারস্য সভ্যতা
  • পারস্য সাম্রাজ্য ও তার ইতিহাস
  • পশ্চিম এশিয়ার অন্যান্য সভ্যতা (হিব্রু, হিট্টাইট, ফ্রিজিয়, লিডীয় সভ্যতা, ফিনিশীয় সভ্যতা, মাইনোসীয়- মাইসিনীয় সভ্যতা, গ্রীসীয় সভ্যতা, হেলেনিস্টিক যুগের সভ্যতা ও সংস্কৃতি, রোমক সভ্যতা)
  • প্রাচীন ভারতের ইতিহাস (সিন্ধু সভ্যতা, আর্যজাতি ও বৈদিক সভ্যতা, মৌর্য যুগ)
  • চীনের প্রাচীন ইতিহাস
  • আমেরিকা মহাদেশের প্রাচীন ইতিহাস
  • কোরিয়া ও জাপানের ইতিহাস
  • বিকাশরুদ্ধ সমাজের ইতিহাস
  • অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস
  • ওশেনিয়ার ইতিহাস
  • আফ্রিকা মহাদেশের প্রাচীন ইতিহাস
  • ইউরেশিয়ার বর্বর জাতির ইতিহাস
দীর্ঘ ও বহুদিক বিস্তারিত সূচিপত্রটিকে অনেকটা খণ্ডিত করে প্রকাশ করা হল। এই খণ্ডিত অংশটুকু পাঠ করলেও আলোচ্য বইয়ের বিস্তৃতি অনুধাবন করা সম্ভব। বিশ্বের ইতিহাসে মানুষের অবদান ও পদক্ষেপের প্রায় সবগুলো প্রসঙ্গ লেখকদ্বয় স্বল্প আয়তনে হলেও উল্লেখ করেছেন। নতুন পাঠক মানুষের সভ্যতা ও সংস্কৃতির ইতিহাস বোঝার জন্য যতটুকু জানা প্রয়োজন, তার সবটুকু পাবেন এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়। পুরনো পাঠকেরও নিরাশ হবার ভয় নেই; কারণ এত বেশি উপ প্রসঙ্গ আলোচনা হয়েছে যে, অন্য বই থেকে এই বইটিকে অনায়াসে প্রসঙ্গের ব্যাপ্তিগত দিক থেকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।

 মানুষের ইতিহাস মূলত তার সভ্যতা ও সংস্কৃতি নির্মাণের ইতিহাস। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মানুষ নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী বসতি স্থাপন করেছে, শত শত বৎসর ধরে একই স্থানে বাস করে পত্তন ঘটিয়েছে গ্রাম, নগর ও রাষ্ট্রের। বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকেও এইসব জনবসতির মানুষদের মধ্যে ছিল পার্থক্য। তাই কেউ কেউ হয়তো কুড়েঘর তৈরি করে সন্তুষ্ট, আবার কেউ বা আরও বেশি নান্দনিক বহুতল বিশিষ্ট বাড়ি, কাঠামোবদ্ধ নগর পরিকল্পনার জন্য চিন্তাব্যয় করেছে। কেউ রূপকথাকেই ভেবেছে চরম কাঙ্ক্ষিত কিছু, আবার কোন কোন জনগোষ্ঠী রূপকথার আশ্রয় ছাড়াই যাপন করেছে সংস্কৃতিমান জীবন। এরকম পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের বিভিন্নরকম চিন্তা ও কর্মকাণ্ডের নিদর্শন পাওয়া যায়। এর সবগুলোই আসলে মানবপ্রজাতির বিকশিত হবার কর্মক্ষমতা, বুদ্ধিবৃত্তিক সামর্থ ও কল্পনাশক্তির প্রকাশ। ইতিহাসের ধারাবাহিক পথ বেয়ে যা রূপান্তরিত হয়েছে সংস্কৃতি ও সভ্যতাতে।

এই বইয়ে মানচিত্র রয়েছে ৭ টি আর চিত্র রয়েছে ৩৮টি। সভ্যতার সংজ্ঞা অনুসন্ধিৎসু পাঠকমাত্রেরই এই বইটিকে অবশ্যপাঠ্য বলে গণ্য করা উচিত।


---------------------#---------------------
মানুষের ইতিহাস (প্রাচীন যুগ)
আবদুল হালিম
নূরুন নাহার বেগম



প্রচ্ছদঃ আবদুল মুকতাদির
প্রকাশকঃ আগামী প্রকাশনী, ঢাকা।
প্রকাশকালঃ পঞ্চম মুদ্রণ আষাঢ় ১৪০৩ জুলাই ১৯৯৬
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৮৮
মূল্যঃ ১৬০ টাকা
ISBN: 984-401-150-7

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ