কাহিনী সংক্ষেপ:
সমুদ্রমেখলা এ দ্বীপের বহু শতাব্দীর গুপ্ত কথা ঘন বন ঢেকে রেখেছিল। ভারত মহাসমুদ্র স্বয়ং এর প্রহরী, দেখতে পাও না?
এশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের কাছেই একটি ভীষণ দুর্গম দ্বীপ, অনেক অনেক বছর আগে যেখানে নগর গড়ে তুলেছিল ভারতবর্ষের শাসক। যেখানে গুপ্ত আছে তৎকালীন সময়ের বহু রহস্য, ঐতিহ্য এবং ঐশ্বর্য্য, যার প্রহরী স্বয়ং প্রকৃতি নিজেই।
অজানাকে জানার আগ্রহ মানুষের রক্তে মিশে আছে। তাই তো একদা দুর্ঘটনাবশত দ্বীপে গিয়ে কিছু অমীমাংসিত রহস্য নিজের মনে বয়ে বেড়ানো জামাতুল্লার একদিন দেখা হয় সুশীলের সাথে।
সুশীল সম্ভ্রান্ত জমিদার বাড়ির ছেলে, পড়াশুনা করা সত্ত্বেও জমিদারি ঠাট বজায় রাখতে চাকরির দিকে তার বিশেষ মন ছিল না। কিন্তু আশেপাশের আত্মীয় স্বজনদের অবস্থার উন্নতি দেখে তার টনক নড়লো এবং সে কলকাতা যাবার জন্য মনস্থির করলো।
কলকাতায় তার জামাতুল্লার সাথে পরিচয় এবং জামাতুল্লার কাছেই সেই দ্বীপের গল্প শোনা। অজানাকে জানার আকাঙ্ক্ষা তাকে টানতে শুরু করলো। সে তার মামাতো ভাই সনৎ এর সাথে পরামর্শ করলো এবং সেই দ্বীপে যাওয়ার জন্য মনস্থির করলো।
ভারতবর্ষ থেকে শুরু করে সেই দ্বীপে যাওয়ার পথে অসংখ্য বার তারা মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছিল। যার প্রহরী স্বয়ং প্রকৃতি নিজেই সেখানে যাওয়া নিতান্তই সহজ কথা নয়! সেই মানুষগুলো নেই যারা নগর স্থাপন করেছিল, তাদের চিহ্নও অবশিষ্ট নেই, জানার উপায় নেই তারা কারা ছিল, কিন্তু শত শত বছর পরও প্রকৃতি পাহারা দিয়ে রেখেছে তাদের ফেলে যাওয়া সকল কিছু!
পদে পদে বিপদের সম্মুখীন হতে হতে জামাতুল্লা-সুশীল-সনৎ এর শেষ পরিণতি কি হয়েছিল? সেই ভীষণ দুর্ভেদ্য সেই নগরী খুঁজে পাওয়া মুখের কথা ছিল না। তারা কি লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছিল? প্রকৃতি কিভাবে সেই প্রাচীন একটুকরো ভারতকে রক্ষা করছিল? সুশীলরা শেষমেশ কি প্রকৃতিকে প্রতিহত করতে পেরেছিল? সেই শত বছরের ঐতিহ্য, রহস্য, ঐশ্বর্যের সন্ধান কি তারা পেয়েছিল? জানতে হলে আর দেরি না করে পড়ে ফেলুন, "হীরামানিক জ্বলে"!
মন্তব্য:
মানুষের একটি অত্যন্ত সহজাত স্বভাব হলো কৌতুহলপ্রবণতা, যার জন্য মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব! মানুষের এই অনন্য গুণটি এই উপন্যাসটিতে তুলে ধরেছেন লেখক। "হীরামানিক জ্বলে" উপন্যাসের সুশীলের সাথে "চাঁদের পাহাড়" উপন্যাসের শঙ্করের একটি ভীষণ রকম মিল দেখা যায়। এরা দুজনই একটি সুন্দর সরলরেখায় বহমান জীবন থেকে একটি অনিশ্চিত এবং পদে পদে বিপদসংকুল একটি জীবনের পথে পাড়ি দেয় শুধুমাত্র কৌতূহল এবং অ্যাডভেঞ্চারের জন্য! জীবন জীবনের নিয়মে চলেই যায়, কিন্তু এই ছোট্ট জীবনকে উপভোগ কিভাবে করতে হয় তা বোধহয় শঙ্কর এবং সুশীল-সনৎ-জামাতুল্লার মাঝেই রেখে গেছেন লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়! প্রকৃতি এবং অ্যাডভেঞ্চারের এক অনবদ্য মিশেল হলো এই হীরামানিক জ্বলে! হ্যাপি রিডিং
**********
হীরামানিক জ্বলে
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রচ্ছদশিল্পী: মোস্তাফিজ কারিগর
প্রকাশকাল: একুশে বইমেলা, ২০১৬
প্রকাশনী: গদ্যপদ্য, ঢাকা
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯৬
মূল্য: ১৮০ টাকা
ISBN: 978-984-91751-1-7
১৫ থেকে ৩০ জুলাই ২০২১ এ গ্রন্থগত'র পৃষ্ঠপোষকতায় 'হিজিবিজি' ম্যাগাজিন আয়োজিত বুক রিভিউ প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হওয়ায় রিভিউটি প্রকাশ করা হল।
0 মন্তব্যসমূহ
মার্জিত মন্তব্য প্রত্যাশিত। নীতিমালা, স্বীকারোক্তি, ই-মেইল ফর্ম