আদেল পারভেজের লাইফব্লাড ফিকশন উপন্যাস 'অসম্পূর্ণ সত্তা' - মরিয়ম মেরিনা

আদেল পারভেজের লাইফব্লাড ফিকশন উপন্যাস 'অসম্পূর্ণ সত্তা'

 

কৃপাদের স্থায়ী বাড়ি থাকা সত্ত্বেও অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকে। মাসে মাসে ভাড়াবাড়িও পাল্টানো হয়।কিন্তু কেন পাল্টানো হয় কৃপা তা জানে না। এবার বাড়ি পাল্টানোর সময় কৃপা তার ডায়েরিটি হারিয়ে ফেলে।

তিমির বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। সে বাংলায় অর্নাস ফাইনাল ইয়ারে। গল্পের শুরুতে তার দাদার মৃত্যুবার্ষিকীতে ফেলে আসা বর্ণিল দিনগুলো মনে করতে দেখা যায় তাকে। তিমিরকে লেখক একজন ভালো ছেলের সব গুণ দিয়ে সাজিয়েছেন।

কৃপার পরিবার তিমিরদের বাসায় পাশেই থাকতেন। ভাগ্যক্রমে তিমিরই পায় কৃপার ডায়েরীটি। তিমির জানতো অন্যের ডায়েরি পড়া ঠিক না কিন্তু না পড়লেও ডায়েরির মালিক কে খুঁজে বের করাও যাবে না। অগত্যা পড়তেই হল।

তিমির বুঝতে পারল, কৃপা নামের মেয়েটি আর দশটা সাধারণ মেয়ের থেকে আলাদা। সে রাতের আকাশ কখনো দেখেনি, দিনের আকাশ দেখতো বাসা পাল্টানোর সময়। বন্ধু বলতে তার বাবা-মা। কিছু গল্পের বই আর গান নিয়েই তার দিন কাটতো। শপিং পযন্ত তার করার সুযোগ ছিল না। বাবা-মা বিয়ের সমন্ধ আসলেই ফিরিয়ে দিত। কৃপা ভাবত, সে খুব সুন্দরী, তাই তার জানালার পাশে ছেলেদের ভীড় থাকত। সেই জন্য জানালাটা পর্যন্ত খোলা হত না। কারোর সমানে তাকে আনা হত। কিন্তু তার ছেলেবেলাটা ছিল এসবের উল্টো। সেখানে আর দশটা সন্তান যা পায়,তার থেকেও বেশি পেয়েছিল সে।

ডায়েরীর পেছনে তিমির কৃপার ফোন নম্বর পায়। কিন্তু টানা দুইদিন তাকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। কিন্তু এই ডায়েরীটাই তিমিরকে দূর্বল করে তোলে কৃপার প্রতি। অতঃপর কৃপা একদিন ফোন রিসিভ করে আর শুরু হয় তাদের কথোপকথন। একজন আর একজনের মোহে পরে। কৃপাকে নতুন জীবন দেওয়ার স্বপ্ন দেখায় তিমির।ততদিনেও তাদের দেখা হয়নি।

এদিকে তিমিরকে একতরফা ভালোবেসে গেছে তনু। এবং বাসা থেকেও তিমিরের ফুফাতো বোন তনুকেই সংসারের দায়িত্ব দিতে চায় তিমিরের মা। তিমির তা বোঝার আগেই কৃপাকে নিয়ে পাড়ি দিতে চায় অজানা উদ্দেশ্যে।

এখন পর্যন্ত সবকিছুই কিছুই ঠিকঠাক ছিল। কৃপা যেদিন বাসা থেকে বেরিয়ে আসে, সেদিন রাতেই কৃপার মা একটি চিঠি দেয় কৃপাকে। কিন্তু সেদিন রাতে কৃপা সেই চিঠি পড়েনি।

গল্পের শেষ মূহুর্তে যখন কৃপা চিঠিটি পড়ল, তার আর তিমিরের সাথে দেখা করার উপায় ছিলনা। তিমিরের দেওয়া ঠিকানায় সে আর আসেনি কিন্তু পাঠিয়েছে সেই চিঠিটি। তারো আগে একটা বার্তা পাঠায় কৃপা, সেখানে লেখা,

আমাকে আর খুঁজো না। এই শহর, এই সমাজ, প্রেম, ভালোবাসা আমার জন্য না।


এসব ধোঁয়াশা লাগে তিমিরের কাছে। ধোঁয়াশা কাটাতে কৃপার মায়ের দেওয়া চিঠিটা সে শেষ করল। তাতে লেখা ছিল:

তোমার মধ্যে নারী বৈশিষ্ট্য বিদ্যামান থাকলেও তুমি একজন অসম্পূর্ণ মানবী। সন্তান জন্মদানে অক্ষম তুমি। ...এককথায় বলতে গেলে- নপুংসক তুমি।



লেখক আদেল পারভেজের প্রথম লাইফব্লাড ফিকশন উপন্যাস 'অসম্পূর্ণ সত্তা'। প্রচ্ছদশিল্পী ওয়ালিউল ইসলাম, তার প্রচ্ছদেই মূল গল্পের সুস্পষ্ট ধারনা দেন। গল্প থেকে বইয়ের নামকরণ ও প্রচ্ছদ দুটোই সার্থক। এখানে সাদামাটা ভাষায় একটি অসম্পূর্ণ প্রেমের গল্পের প্রকাশ করছেন লেখক। 


নোলক প্রকাশনীর এই বইটির পেজ ১১২। যার বাজার মূল্য ২৫০৳

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ