অমর একুশে গ্রন্থমেলা (২০২২) তে প্রকাশিত হয়েছে রোমেল রহমানের লেখা 'মহামারী দিনের প্যারাবল'। এর নান্দনিক প্রচ্ছদ করেছেন সুমন রহমান। প্রকাশ করেছে অনুপ্রাণন প্রকাশন, ঢাকা। ২০০ টাকা দামের তিন ফর্মার বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার ৪৩৫-৪৩৬ নং স্টলে।
বইমেলাতে নতুন বই প্রকাশকালের অনুভূতি এবং নিজের সাহিত্যভাবনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রোমেল রহমান কথা বলেছেন গ্রন্থগত এর সঙ্গে।
❑ সম্প্রতি আপনার বই প্রকাশিত হলো৷ আপনার অনুভূতি জানতে চাই৷
= অনুভূতি ভোঁতা! তবে পান্ডুলিপি জমে থাকার অস্বস্তি থেকে নিস্তার পাওয়া গ্যাছে টাইপ একটা স্বস্তি হলো এই যা।
❑ বই প্রকাশের সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন কীভাবে?
= লিখি তো প্রকাশের জন্যে, সেই সূত্রেই প্রকাশের প্রয়াস; উপনীত হওয়া কিসিমের আলাদা আহ্লাদ- ফাহ্লাদ নাই।
❑ বইটি প্রকাশ করতে প্রকাশক নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয়েছিলো কি?
= গল্পের বইয়ের প্রকাশক পাই না, অন্তত আমার গল্পের ক্ষেত্রে । পান্ডুলিপি পড়ে গল্প পাল্টাবার অনুরোধ / অজুহাত পেয়েছি গল্পে পলিটিক্যাল এসেন্স থাকার তকমা খেয়ে! ফলে আমি বরাবরের মতো পান্ডুলিপি জমা রেখে স্তুপ রচনা করেছি এবং ফাঁকে ফোকরে পত্রিকা / ওয়েব্জিন গুলোয় ছেপে গেছি কিছু গল্প! সময় মতো সেগুলো বই আকারে বেরিয়ে যাবে আমার বিশ্বাস। টাকার বিনিময়ে বই করাটায় আমি আগ্রহী না। এই 'মহামারী দিনের প্যারাবল' বইটা লিখেছি মহামারী সময়ের জ্যান্ত সব সংকট ও বিবিধ কাব্জাব নিয়ে। ২০২১ এ একজন প্রকাশক আগ্রহ নিয়ে ঘোষণা দিয়ে প্রচার শুরু করেও শেষমেশ ঘোট পাকালেন। আমি বন্ধ করে দিলাম বইটা প্রকাশ। কয়েকমাস পর অনুপ্রাণনের আবু এম ইউসুফের সঙ্গে আলাপ হলো তিনি নির্বিবাদে পান্ডুলিপি নিলেন এবং প্রকাশ করতে আগ্রহী হলেন। বইয়ে প্রচুর রাজনৈতিক এবং তীর্যক প্যারাবল থাকা সত্ত্বেও তিনি আপত্তি করেননি! বানান ত্রুটি ব্যাতিত অক্ষত রাখতে আগ্রহী হয়েছেন এই প্রকাশক। যেটা আগ্রহজনক আমার জন্য। ফলে বইটা অনুপ্রাণন প্রকাশ করে ফেলেছে।
❑ নিজের লেখার প্রতি আত্মবিশ্বাস কতটুকু?
= অবিশ্বাস নেই।
❑ অনেকে বলেন লেখার ক্ষেত্রে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আপনারা প্রস্তুতির কথা জানতে চাই।
= প্রস্তুতি ছাড়া লেখক আসেন না। আর এটা তো চলমান ব্যাপার । যারা প্রস্তুতি কিসিমের কথাবার্তার কাঁটাতার দেন তারা সম্ভবত মৌসুমি / শখের লেখকের সংগে প্রকৃত লেখকদের একপাল্লায় তোলেন। তাদের চোখে 'প্রস্তুতি' একটা কাঠামো যা তাদের দারস্থ করাবার একটা ফাঁদ!
❑ পাণ্ডুলিপি গোছানোর ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন?
= এই বইটার ক্ষেত্রে পুরোটাই মহামারী সময়ে লেখা প্যারাবল / গল্প তোড়া বেঁধে দিয়ে দেয়া। এর কিছু গল্প অন্য ভাষায় তর্জমা হয়েছে এবং গ্রাফিক আকারে প্রকাশিত হয়েছে ভিনদেশে, সেগুলো প্রথমদিকে থেকে গেছে গল্পগুলোর একটু বেশি পাত্তা অনুভব হওয়ায়। কিছু এক্সপ্রেরিমেন্টাল গল্প আছে যেমন, একটা ছবিগল্প যেটা আমার ফেসবুকে আমার আর আমার স্ত্রীর ছবি সহ ক্যাপশনের স্ক্রিনশট! শিরোনাম — 'লগডাউনের দিনে বান্দর তালাশ'। আমার মনে হয়েছে ছবি এবং ক্যাপশন মিলে একটা গল্প এটা। পাঠক পড়ে দেখুক ব্যাপারটা! আহামরি কসরত করিনি পান্ডুলিপি নিয়ে কেননা গল্পগুলো এই সময়ের দলিল হয়তোবা (যার সবটুকু ছেপে দেওয়াই উচিৎ) ।
❑ শিল্প না কি পাঠক, আপনার দায়বদ্ধতা কার কাছে?
= আমি আমার শিল্প সৃষ্টির ব্যাপারে আগ্রহী। পাঠকের ভালো না লাগলে আমার কিছু করার নাই।
❑ একজন পাঠক হিসেবে যখন বইটি দেখছেন/পড়ছেন, তখন বইটিকে কেমন মনে হচ্ছে?
= পাঠক বৈচিত্র্যময় গল্প সফরের মধ্য দিয়ে যাবে এটুকুই বলা যাক, কেননা —
'পাঠক' হিসেব বইটা দেখার সুযোগ নেই, বইটার সব শব্দ- বাক্য আমার কারবার, এবং আমি বের হয়ে গেছি এর থেকে আপাতত, নতুন গল্পের শিকারে।
**********
বইটি প্রকাশের খবর পড়ুন এখানে
**********
মহামারী দিনের প্যারাবল
রোমেল রহমান
ধরন : প্যারাবল / গল্প
প্রকাশক : অনুপ্রাণন প্রকাশন
প্রচ্ছদ : সুমন রহমান
মুদ্রিত মূল্য : ২০০/-
0 মন্তব্যসমূহ
মার্জিত মন্তব্য প্রত্যাশিত। নীতিমালা, স্বীকারোক্তি, ই-মেইল ফর্ম