ঈশ্বর ও জ্যোৎস্না - সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়


 লিখেছেন: সায়নকুমার দে

'ভালো বই' প্রকাশনা থেকে প্রশান্ত মাজীর উদ্যোগে প্রকাশ পেয়েছে সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের একটি দু-ফর্মার বই, "ঈশ্বর ও জ্যোৎস্না"। নানা লিটল ম্যাগাজিন, ডায়েরির পাতায় ছড়িয়ে থাকা লেখকের কবিতাগুলি নিয়ে একটি সংকলন। প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী দেবব্রত ঘোষ। ব্যাককভারে আছে লেখকের একটি স্কেচ, শিল্পী হিরণ মিত্রের আঁচড়ে।

ভূমিকায়, জয় গোস্বামী উল্লেখ করেছেন কৃত্তিবাস পত্রিকায় নেওয়া সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের কথা, জয় নিয়েছিলেন সেই বিস্তৃত সাক্ষাৎকার। কথোপকথন শেষে বাড়িতে যাওয়ার পথে তাঁকে সন্দীপন জানিয়েছিলেন,

"গদ্য আমি পড়ি না।”


এটা বলার পর যোগ করেছিলেন,

"যদি একটুও বানিয়ে না বলি তবে স্বীকার করতেই হয়— গদ্য, অর্থাৎ যাকে বলে বাংলা গদ্য, তা আমি পড়ি-ই না। কবিতা পড়ি। সব কবিতা।”


কে না জানে, কৃত্তিবাসী হওয়ায় কবিদের সঙ্গেই ছিল তাঁর বন্ধুতা। কিন্তু তাঁর কবিতা লেখার কথা প্রায় অজ্ঞাত ছিল।

সন্দীপনের কবিতা তাঁর গদ্যের মতই ক্ষুরধার, ওঁর গদ্যেও যে কবিতার আভাস।

"দাঁড়াও পথিকবর;
চুম্বনরহিত এই ওষ্ঠ ও অধর।
কাছে এসে চলে যাও কে প্রিয় যুবক
মান্য করো এ স্মৃতিফলক।
              মাটির ভিতরে আছে মুখশ্রীর ছাপ
              বালিকার অভিমান
              নীরবতা
              চুম্বন, নিষ্পাপ
কে নেবে এ-সব?
তুমি অন্ধকার হলে
জোনাকির মাল্য গলে
দাঁড়াও অদূরে এসে
            একাকী বৃক্ষের অবয়ব।”


কবিতাটির নাম "কুষ্ঠরোগিনীর জন্য এপিটাফ"

আরেকটি লেখা, নাম "ভয়"

“র‍্যাকে একটিমাত্র বই রেখে গেছে কে, মাঝরাতে আমি রাখিনি?"


বইটির ব্যাককভারে আছে একটি অসামান্য লেখা,

"এখন অনেক রাতে বিছানা পেয়েছ
শান্তিনিস্তব্ধতা
এখন ভেবো না কোনো কথা
এখন শুনো না কোনো স্বর
নির্জন ঘর
রক্তাক্ত হৃদয় মুছে
ঘুমের ভিতর
রজনীগন্ধার মত মুদে থাকো।"


**********

ঈশ্বর ও জ্যোৎস্না
সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়

কাব্যগ্রন্থ
প্রকাশনা: 'ভালো বই', ভারত

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ